ইশরাত মুনিয়া: ঘরোয়া পরিবেশে গত ১২ নভেম্বর টিএসসিতে আয়োজিত হয় ‘লাইব্রেরিয়ান ভয়েস-গোলাম মোস্তফা ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট’র উদ্বোধন ও প্রথম মতবিনিময় সভা।
বইয়ের আলো মানুষের মাঝে বিলিয়ে পাদপ্রদীপের অন্ধকারে থেকে যাওয়া আত্মোৎসর্গীকৃত মহৎপ্রাণগুলোকে সম্মানিত ও উৎসাহিত করার স্লোগান নিয়ে গঠিত এই ট্রাস্টের প্রথম সভায় উপস্থিত ছিলেন ট্রাস্টের সভাপতি, উপদেষ্টামণ্ডলী ও কার্যকর কমিটির সদস্যগণ।
অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন জনাব শাহাজাদা মাসুদ আনোয়ারুল হক, সভাপতিত্ব করেন হাক্কানী প্রকাশনীর কর্ণধার এবং ট্রাস্টের সভাপতি জনাব গোলাম মোস্তফা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. উদয়ন ভট্টাচার্য।
এছাড়াও ট্রাস্টের উপদেষ্টামণ্ডলীর মাঝে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গ্রন্থাগার পেশাজীবী ড. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, একেএম মফিজুর রহমান, মো. জামাল উদ্দিন, গ্রন্থাগার পেশাজীবী ড. মোহাম্মদ হোচ্ছাম হায়দার চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের পরিচালক সৈয়দ আলী আকবর, গ্রন্থাগার পেশাজীবী আবু মো. হান্নান, অমল কুমার ঘোষ, হাজেরা রহমান, গবেষক কাজী সামিও শীশ, গবেষক ও লেখক রাদিয়া তামিম, মোসা. সিতারা বেগম, খন্দকার আসিফ মাহতাব পাভেল এবং কবি ও প্রাবন্ধিক বকুল হায়দার।
উপদেষ্টামন্ডলীর মধ্যে ড. শাকিল মালিক, আতিক জামান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. খালেদ হোসাইন, গ্রন্থাগার পেশাজীবী হাসিনা আফরোজ, ড.আনোয়ারুল ইসলাম, অরিজিৎ দাস প্রমুখ উপস্থিত হতে অপারগ ছিলেন।
অতিথিদের আসন গ্রহণের পর অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের গ্রন্থাগারিক ও এই ট্রাস্টের উদ্যোক্তা কনক মনিরুল ইসলাম একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে ট্রাস্টের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, ‘পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত শব্দগুলোর মাঝে একটি হলো বই বা বই পড়া। এই বই পড়াকে উৎসাহিত করার জন্যে যারা কাজ করে, তাদের সম্মানিত ও উৎসাহিত করতে গঠিত হয়েছে এই ট্রাস্ট, যাতে সমাজে এই ধরণের কার্যক্রম আরো বৃদ্ধি পায়।’
বক্তব্যের এক পর্যায়ে তিনি ট্রাস্ট পরিচালনার বিধিবদ্ধ নিয়ম ও আইনগত বিষয়ের কথা ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘ট্রাস্টের কাজ হবে নিয়মতান্ত্রিক। সাংগঠনিক কাঠামোটি হতে হবে ‘সাস্টেইনেবল’, যেন অল্প কিছুদিন কাজের পরেই তা হারিয়ে না যায়। প্রজন্মান্তরে যেন এর কার্যক্রম বজায় থাকে।’
তিনি উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে আহ্বান করে বলেন,উক্ত ট্রাস্টের উপদেষ্টারা যেন তথাকথিত উপদেষ্টা প্যানেলের মত নামেমাত্র না থাকে।সত্যিকার অর্থেই তারা যেন দীর্ঘদিন ধরে পথ দেখিয়ে পরামর্শ দিয়ে ট্রাস্টের কাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করেন। এরপর কনক মনিরুল ইসলাম ট্রাস্ট মেম্বারদের পরিচয় জ্ঞাপন করেন।
প্রাথমিক পর্বের পর ছিল অনুষ্ঠানে উপস্থিত উপদেষ্টামন্ডলীর বক্তব্যপর্ব। উপদেষ্টামন্ডলী ট্রাস্টের কর্মপন্থা সম্পর্কে নিজেদের অনুভূতি ও মতামত ব্যক্ত করেন। প্রধান অতিথি অধ্যাপক ড. উদয়ন ভট্টাচার্য বলেন, ‘আসলে সঠিক মানুষকে কীভাবে খুঁজে বের করা হবে, তা সত্যিই একটা বড় চ্যালেঞ্জ।
সভাপতি গোলাম মোস্তফা জোর দিয়ে বলেন, ট্রাস্টের সাথে সম্পর্কিত কোনো ব্যক্তি, তাদের আত্মীয় স্বজন কোনোভাবে তাদের সাথে সম্পর্কিত কেউ এই পুরস্কারের জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবে না। ট্রাস্টের কাজের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে এই ব্যাপারটি কঠিনভাবে মানতে হবে বলে তিনি মতামত ব্যক্ত করেন।অবশেষে তিনি ট্রাস্টের জন্য শুভকামনা ব্যক্ত করে তার বক্তব্য শেষ করেন।
উক্ত সভায় ট্রাস্টের কিছু মৌলিক বিষয় ও কর্মপন্থা সম্পর্কে সকলের সম্মতিক্রমে কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। অবশেষে ট্রাস্টের ওয়েবসাইট উদ্বোধন করার মাধ্যমে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।