বই বিনিময় ডট কম একটি বুক শেয়ারিং সাইট যা বাংলাদেশে সম্পূর্ণ নতুন একটি ধারণা। তবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এরকম সাইট এর প্রচলন আছে।
বই বিনিময় ডট কম আসলে কী, কিভাবে কাজ করে এবং বইকে ঠিক কিভাবে পাঠকের হাতে তুলে দেয় সেই সবের আদ্যোপান্ত নিয়েই লাইব্রেরিয়ান ভয়েসের এই বিশেষ প্রতিবেদন।
বই বিনিময় ডট কমের মাধ্যমে একদল বইবন্ধু (যিনি বই ধার দেবেন) তাদের বাসায় অযত্নে, অবহেলায়, বুক শেলফে ধুলো জমে থাকা বইগুলো অন্যদেরও পড়ার সুযোগ করে দিতে পারেন এবং যারা সেইসব বই পড়ার জন্য খুঁজছে, তারাও সেইসব বই নামমাত্র মূল্যে বই বিনিময় ডট কমের মাধ্যমে ডেলিভারী পেয়ে পড়তে পারবেন। এখানে উল্লেখ্য যে বই বিনিময় ডট কম বই কেনা-বেচা করে না। এখানে বই মুদ্রিত মূল্যের ২-৮% এ পাওয়া যায়। বইবন্ধুরা সর্বনিম্ন দশটি বই কমপক্ষে চার মাসের জন্য ধার দিতে পারবেন এবং চাইলে সর্বনিম্ন পাঁচটি বই পুরোপুরি ডোনেট করতে পারবেন। অন্যদিকে পাঠকেরা সর্বনিম্ন ৩ টি ও সর্বোচ্চ ৪ টি বই ২০ দিনের জন্য অর্ডার করতে পারবেন। তবে কিছু ফি এর বিনিময়ে বই ধারের মেয়াদ বৃদ্ধি করা যাবে।
বই বিনিময় ডট কম বর্তমানে ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, কেরানীগঞ্জ ও সাভারে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
মহতী এই উদ্যোগের সাথে জড়িয়ে আছে স্বপ্নবাজ চার তরুণের নিরলস সাধনা। পথচলার সেই গল্পের আদ্যোপান্ত লাইব্রেরিয়ান ভয়েসকে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোক্তা ও সিইও জনাব মোঃ সাজ্জাদুর রহমান। এই সাক্ষাৎকারে জানা যাবে বই বিনিময় ডট কম কী, কিভাবে কাজ করে এবং তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা।
লাইব্রেরিয়ান ভয়েসঃ শুরুর গল্পটা যদি বলতেন
মোঃ সাজ্জাদুর রহমানঃ বইয়ের সাথে আমার প্রথম পরিচয় ২০১৫ সালে। “বই” বলতে স্কুল-কলেজের বই না। বোঝাচ্ছি সেই বইকে, যাকে এক কথায় যাকে আমরা “আউটবুক” বলি।
তখন আমি ক্লাস থ্রি’তে পড়ি। পুরো ফ্যামিলি শিফট করে তখন প্রথম ঢাকায় এসেছি। ক্লাস করবো কী, এসেই জ্বরে পড়ে গেলাম। এর মাঝে আপু একদিন বাসায় আসলো, উনি আগে থেকেই ভার্সিটিতে পড়ালেখার সুবাদে ঢাকাতেই থাকতেন। যতদূর সম্ভব তখন ফেব্রুয়ারি মাস চলছিল এবং আপু আসার সময় সাথে করে তিনটা বই নিয়ে এসেছিলেন। এর মাঝে একটি ছিল হুমায়ুন আহমেদের কিশোর উপন্যাস “ছেলেটা”। এসব বই পড়ার কোন আগ্রহই তখন ছিল না। কারণ, এতদিন বই বলতেই আমার চোখের সামনে ভেসে উঠতো স্কুলের “পাঠ্যবই” এর ছবি।

হেলাফেলায় বইটা হাতে তুলে নিয়ে পড়া শুরু করলাম । বইটা পড়া শেষ করে নিজেই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না! একটানা বসে আমি বইটা পড়ে শেষ করেছি? লেখক কী এমন লিখেছিল বইয়ের ভিতরে যা আমাকে উঠতে দেয়নি?
সেই বইটিই আমাকে বইয়ের দুনিয়ায় স্বাগত জানালো। এরপর থেকে নিয়মিত বই পড়া শুরু করলাম। প্রথমদিকে মাসে হয়তো একটা দুইটা পড়তাম। মাঝে মাঝে তাও হতো না। ক্লাস সিক্সে রাজউক উত্তরা মডেল কলেজে চান্স পেলাম। এভাবে আস্তে আস্তে উপরের ক্লাসে উঠতে থাকলাম আর সেই সাথে বই পড়ার নেশা ও গতিও বাড়তে থাকলো। এবং এসবের মাঝেই আমি একটি কঠিন বাস্তবতা উপলদ্ধি করলাম।
ক্লাস সিক্স-সেভেনের শিক্ষার্থীদের কোন আয় করার সুযোগ থাকার কথা না। আসলে শব্দটা “আয়” না, জমাতে পারে না। যতটুকুও বা আয় (?) করে তা হলো স্কুলের টিফিনের বাঁচানো টাকা অথবা স্কুলে বা প্রাইভেটে রিকশায় যাওয়ার বাঁচানো টাকা, সাথে হয়তো অল্প কিছু পকেট মানি যা কেউ পায় বা পায় না।
নিম্ন মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত বা উচ্চ মধ্যবিত্ত, যাদের কথাই বলি না কেন, কোন ফ্যামিলিই প্রতিদিন ১০০-২০০ টাকা ছেলে-মেয়েদের টিফিনের জন্য দেয় না। এটা সর্বোচ্চ ২০/৩০ বা ৫০ হতে পারে। তাহলে মাসে একটা ছেলে বা মেয়ে সর্বোচ্চ ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত জমাতে পারে। তাও আবার যদি একদিনও টিফিন না খায় বা রিকশা ব্যবহার না করে।
এখন আমরা বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান বইয়ের বাজারের দিকে তাকাই। ভাল মানের কোন লেখকের মানসম্মত বইয়ের দামই ২০০-৩০০ টাকার নিচে না। আমি যদি হুমায়ুন আহমদের কথাই বলি, ২০০ টাকার নিচে হাতেগোনা কয়েকটি বই আছে। জাফর ইকবাল স্যারের বইগুলোর দাম এরচেয়েও বেশি। এছাড়া নবীন লেখক যেমন আরিফ আজাদ, সাদাত হোসাইন, আয়মান সাদিকের বই ধরা মানেই ৩০০ টাকা। আমি লেখককের বা প্রকাশকদের দোষ দিচ্ছি না, বই ছাপানোর খরচের পাশাপাশি লেখকের লভ্যাংশ দিলে হয়তো এরকম দামেই বই বাজারে আনতে হবে। কিন্তু আমার প্রশ্ন হচ্ছে, ২০০ বা ৩০০ টাকা যদি একটি মানসম্মত বইয়ের মূল্য হয়, তাহলে একজন স্কুল বা কলেজগামী শিক্ষার্থী মাসে কয়টি বই কিনে পড়তে পারবে? সংখ্যাটা ৩-৪ এর বেশি হওয়া সম্ভব না। সংখ্যাটা আরো কমে যাবে যদি সে মাসের একটি দিনও ভুলে টিফিন খেয়ে ফেলে। এই বাস্তবতার মাঝে কয়জন বই পড়া চালিয়ে রাখতে পারে? সে তো একজন শিক্ষার্থী, তারও বিনোদনের প্রয়োজন। বই পড়ার সুযোগ না পেয়ে সে ঝুঁকে পড়বে মোবাইল গেমসের প্রতি বা ব্যাপক ফেসবুকিং এর প্রতি। কারণ এগুলো তো ফ্রি, তাকে টাকা দিতে হচ্ছে। যখন খুশি, যতক্ষণ খুশি সে এসবের মাঝে ডুবে থাকতে পারছে।

এলভিঃ “ বই বিনিময় ডট কম” আইডিয়াটি এলো কিভাবে?
মোঃ সাজ্জাদুরঃ আমি যখন ক্লাস সেভেনে পড়ি এবং নিজেও তখন এই রূঢ় বাস্তবার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। বই কিনে পড়ার টাকা পাচ্ছি না। বন্ধুরা সবাই অবসর কাটাচ্ছে কেউ পাবজি খেলে, কেউ ফ্রি ফায়ার খেলে আর কেউ বা ফেসবুকিং করে। আর আমি অবসরে চুপচাপ বসে আছি। কম্পিউটার গেমস বা মাত্রাতিরিক্ত ফেসবুকিং কখনোই আমাকে আসক্ত করতে পারেনি। অবসরে ভাবি, না জানি আমার মত কত শিক্ষার্থী এরকম পরিস্থিতির মাঝ দিয়ে যাচ্ছে। আমার জন্য বা তাদের জন্য কি কিছুই করা যায় না?
খোঁজ নিলাম পুরো উত্তরায়, “পাবলিক লাইব্রেরি” বলতে যা বোঝায় সেরকম কিছু পেলাম না। যদিও এই সমস্যার একটি চমৎকার সমাধান হতো যদি হাতের কাছেই একটা পাবলিক লাইব্রেরি থাকতো। রাজধানী শহরের একটি অভিজাত এলাকায় যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের অবস্থা বুঝতে পারা
খুব কঠিন নয়। এখন আমি কি তাহলে সারা দেশে লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন শুরু করবো? কে শুনবে আমার কথা? আর সারাদেশে হাতের নাগালে লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করাটাও তো আসলে কোন কথার কথা না যে, আজ বললাম আর কাল হয়ে গেলো। প্রতিটি স্কুল-কলেজেই আজ পর্যন্ত লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়নি, সেখানে প্রতিটি এলাকায় লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা তো অলীক কল্পনা। বুঝলাম, যা করার নিজেকেই করতে হবে বা নিজেদেরই করতে হবে। অবসরে অন্যরা গেমস খেলে, ফেসবুকিং করে, আর আমার মাথায় চিন্তার ঝড় চলে। বিহিত একটা করতেই হবে।
জেএসসি পরীক্ষার পর টানা ২ মাস ছুটি পেলাম । আমার ভাষায় “অবসর” পেলাম। অবসরে বইয়ের অভাব আরো জোরালোভাবে অনুভব করতে শুরু করলাম। তবে অবসরে তখন বইয়ের দুশ্চিন্তা না করে ভাবতাম, কীভাবে এই সমস্যার সমাধান পাওয়া যায়। সঠিক দিনক্ষণ বা তারিখ মনে নেই, তবে ক্লাস নাইনে ভর্তির পরেই কোন একদিন আমার মাথায় একটা আইডিয়া চলে আসলো, যে আইডিয়াই পরবর্তীতে প্রকাশ পায় “বই বিনিময় ডট কম” রূপে।
এলভিঃ আইডিয়াটা কি ছিল?
মোঃ সাজ্জাদুরঃ আইডিয়াটা খুব সিম্পল। আমি খেয়াল করে দেখলাম, আমার বাসায় অনেক বই পড়ে আছে, যেগুলো হয়তো কেউ না কেউ পড়ার জন্য আকুপাকু হয়ে খুঁজছে। এর মানে আমি যে বইটি পড়ার জন্য খুঁজছি সেটিও নিশ্চয়ই কারো না কারো বাসায় অবহেলায় পড়ে আছে !! অর্থাৎ, এমন একটি অনলাইন প্লাটফর্ম দরকার যেখানে একদল তাদের বাসায় হেলাফেলায় পরে থাকা বইগুলোর তথ্য আপলোড দিয়ে রাখবে, এবং আরেকদল সেখান থেকে তার পছন্দমত বই অর্ডার করে ধার বা ভাড়া নিতে পারবে। বেশ কয়েকবার আইডিয়াটা রিভিউ করে দেখলাম, নানা দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলাম। টুকটাক কিছু সমস্যা অবশ্যই থাকে তবে সবকিছু মিলিয়ে আমার কাছে আইডিয়াটা বেশ গ্রহণযোগ্যই মনে হলো।
এলভিঃ শুরুটা কিভাবে হলো?
মোঃ সাজ্জাদুরঃ আইডিয়া পাওয়ার পরই খেয়াল করলাম আমার একটি টিমের দরকার। আমি কখনোই একা একা একটা অর্গানাইজেশন বা প্লাটফর্ম এভাবে তৈরি করতে পারবো না। যেহেতু পুরো জিনিসটা হবে অনলাইনে, সুতরাং প্রথমেই আমার একজন ওয়েবসাইট ডেভেলপার লাগবে। তবে আমি নিশ্চই বুয়েট পাস কোন শিক্ষার্থীকে ওয়েবসাইট ডেভেলপার হিসেবে নিয়োগ দিতে পারবো না। সেই সাথে থার্ড পার্টি থেকে করে নিতে গেলেও অনেক খরচ। কিন্তু আমার লাগবে স্বেচ্ছায় কাজ করবে এমন একজন।
সাকিব নামে আমার একজন বন্ধুর সাথে আগে থেকে পরিচয় ছিল, যে আমার পার্সোনাল একটি ইউটিউব চ্যানেলের টেকনিক্যাল দিকগুলো সামলাতো। পরে খোঁজ নিয়ে জানলাম সে নিজেই কোডিং, জাভা, এইচটিএমএল লার্নার। এভাবে হাতের কাছেই একজনকে পাওয়ায় সমস্ত আইডিয়া তাকে খুলে বললাম।আমার আইডিয়া তার মাঝেও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করলো এবং একসাথে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করলো।

জানুয়ারি ২০২০ এর শেষের দিক থেকে আমরা এরকম একটি প্লাটফর্ম নিয়ে কাজ করা শুরু করলাম। দুইটি জিনিসকে প্রথম থেকেই আমাদের ট্যাকল দিতে হলো। প্রথমত,আইডিয়াটি হান্ড্রেড পার্সেন্ট প্রক্রিয়ার মাঝে আনা বা প্রসেসে আনা। দ্বিতীয়ত, সেই আইডিয়া ওয়েবসাইট এ ফুটিয়ে তোলা।
অর্থাৎ, বাইরে থেকে দেখতে আইডিয়াটা যতটা সহজ মনে হয়েছিল, যতই আমরা প্রক্রিয়ার মাঝে ঢুকতে থাকলাম, ততটাই জটিলতর হতে লাগলো। বাইরে থেকে দেখলে মনে হচ্ছে “একদল বই দিচ্ছে, আরেকদল বই নিচ্ছে।“ কিন্তু প্রক্রিয়াগতভাবে দেখলে অনেক প্রশ্ন চলে আসে। যেমন
বইবন্ধু (যিনি বই ধার দেবেন) কি সরাসরি পাঠককে বই দেবে নাকি আমাদের মাধ্যমে? বইবন্ধুর ধার দিতে চাওয়া বই কি তার কাছেই থাকবে নাকি আমরা নিয়ে রাখবো? বই পাঠক একটি অর্ডারে কতগুলো বই নিতে পারবে? কত দিনের জন্য নিতে পারবে? বই পাঠক যদি একসাথে একাধিক বইবন্ধুর বই পেতে চায়, তাহলে কী হবে? বইবন্ধু থেকে বই পাঠক, চক্রটা কিরকম হবে? কতটা সময়সাপেক্ষ হবে?
দিনশেষে গিয়ে যে প্রসেসে দাড়ালো সেটা অনেকটা এরকমঃ

“ পাঠক আমাদের ওয়েবসাইট থেকে ১-৯% মূল্যে বই অর্ডার করবে, ডেলিভারী চার্জ ফ্রি। কেবল বইয়ের ধারমূল্য আমাদের পে করবে। প্রতিটি অর্ডারে সর্বনিম্ন ৩ টি আর সর্বোচ্চ ৪ টি বই অর্ডার করতে পারবে। বইগুলো আমরা দেবো ২০ দিনের জন্য। তবে অর্ডারের সময় কিংবা বই থাকাকালীন কেউ চাইলে এই মেয়াদ সর্বোচ্চ ১০ দিনের জন্য বাড়াতে পারে সামান্য চার্জ দিয়ে। অবশেষে রিটার্নের দিন রিটার্ন চার্জ সহ পাঠক বইগুলো আমাদের কুরিয়ার টিমের হাতে তুলে দেবে।
আর যারা বই ধার দেবে তারা কমপক্ষে ১০ টি বই ৪ মাস বা এরচেয়ে বেশি সময়ের জন্য ধার দিতে পারবে। তবে ডোনেশন করতে চাইলে মাত্র ৫ টি বই দিলেই আমরা ডোনেশন নেব। এবং বইবন্ধুর থেকে বই ধার নিয়ে আসা ও সময় শেষে তাকে ফেরত দিয়ে আসার সম্পুর্ণ খরচ আমরাই বহন করবো। বই ধার বা ডোনেট করলেই ক্রেডিট এর একটা ব্যাপার সামনে চলে আসে। বই ধার দিলে বা ডোনেট করলে বইবন্ধুর লাভ কী? দিনশেষে যেহেতু কোম্পানীরই সেরকম লাভ থাকে না, তাই আমরাও আর বইবন্ধুদের অর্থনৈতিক কোন ক্রেডিট দিতে পারি না। কিন্তু বইবন্ধুরা নিজেরাও যেহেতু পাঠক, তাই আমরা তাদের ১০-২০% পর্যন্ত বাড়তি ছাড়ের ব্যবস্থা করে দেই বইবিনিময়ের প্রতিটি অর্ডারে।
প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ তৈরির করার পর এবার সেটিকে ওয়েবসাইট এ ভার্চুয়াল রূপ দেবার পালা। এটাও আসলে কম জটিল বিষয় না। সাধারণ কোন ই-কমার্সের মত হলে, এরকম ওয়েবসাইট বানানো কোন ব্যপার ছিল না। কিন্তু কিছু অংশে কাস্টমাইজ করার ব্যাপার থাকায় আমাদের কিছুটা বেগ পেতে হয়েছে। একদম দক্ষ কোন ডেভেলপার থাকলে তার কাছে হয়তো এইসব কাস্টমাইজ কোন ইস্যুই না, কিন্তু আমাদের কাঁচা হাতের ছোঁয়ায় সেগুলোও ইস্যু হয়ে মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছিল।
আমার বন্ধু সাকিবকে যখনই বলতাম, “বন্ধু, জিনিসটা কিন্তু ওভাবে করে ওয়েব নিয়ে আসতে হবে, পারবি?” সে কখনোই বলতো না “মনে হয় পারবো না।” আবার এটাও বলতো না, “হ্যাঁ, পারবো।” বরং সবসময় বলতো, “না পারলেও পারতে হবে।”
এটা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই, বই বিনিময় ডট কম ভার্চুয়াল যে রূপ আজ পেয়েছে তা এই ছেলের হাত ধরেই।
আমাদের ওয়েবসাইট এর খুঁটিনাটি ২০২০ এর অক্টোবরের মাঝেই প্রায় শেষ হয়ে গেলো। অর্থাৎ, টানা ৯ মাস কাজ করে প্রজেক্টটি একটি বাস্তব রূপ পেলো। তবে সবকিছু রেডি হলেও দুইটি বড় সমস্যা আমাদের সামনে এসে হাজির হলো। এর একটাকে যদিও “সমস্যা” বলা যায়, তবে আরেকটি “ট্রাজেডি” বলাই সমীচীন।
এলভিঃ কি ছিল সেই সমস্যা আর ট্রাজেডিগুলো?
মোঃ সাজ্জাদুরঃ সমস্যাটি হলো, “যে ব্যাপারটি আমরা কয়েকমাস ধরে চিন্তা, গবেষণা করে একটা প্রসেসে নিয়ে আসলাম, একজন পাঠক সেটা কিভাবে ওয়েবসাইটে এসে কয়েক মিনিটের মাঝেই ধরে ফেলতে পারবে?”
এজন্য আমরা কয়েকজনকে আমাদের ওয়েবসাইট দেখিয়ে বললাম, “কী মনে হয় তোমার এসব দেখে? সাইটটি কীভাবে কাজ করে বুঝতে পারছো কি?” ফলাফল যা আসলো যথেষ্ট ভয়াবহ। যেহেতু ওয়েবসাইট এ বইয়ের দাম দেখা যাচ্ছিলো অত্যাধিক কম, মাত্র ১-৯% , তাই অধিকাংশই বললো, “মনে হয় কম দামে পুরাতন বই বেচা-কেনা করছে।“
মাথায় তখন আকাশ ভেঙ্গে পড়লো। বলে কি !!! ফলে প্রসেস ঠিক রেখে ওয়েবসাইটকে ঢেলে সাজানো হলো। প্রতিটি আনাচে কানাচে মনে করিয়ে দেওয়া হলো, বই বিনিময় ডট কম একটি বুক শেয়ারিং সাইট। এখান থেকে কোন প্রকার বই কেনাবেচা করা হয় না। হোম পেইজে বই ধার দেওয়া-নেওয়ার ব্যাপারটি যুক্ত করা হলো। সাথে মেন্যুবার এ কিছু প্রশ্ন যুক্ত করা হলো। স্বাভাবিক দৃষ্টিতে প্রশ্নগুলো কিছুটা হাস্যকর মনে হলেও, আমার মনে হয় এগুলোই বইবিনিময়কে আপন করে নিতে পাঠককে বাধ্য করেছে। আর এভাবেই প্রথম সমস্যাটির একটা গতি অবশেষে করা গেলো।
এবার আসি ট্রাজেডির কথায়। অক্টোবর নাগাদ আমাদের যখন ওয়েবসাইট রেডি, তখন স্বাভাবিকভাবেই আমরা একটি লজিস্টিক পার্টনারের খোঁজে বের হলাম। একটা নতুন কোম্পানীর নিজস্ব কুরিয়ার টিম থাকবে না, এটাই স্বাভাবিক। তাই থার্ড পার্টিই ভরসা। আর লজিস্টিক খুঁজতে গিয়েই সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা খেলাম। আজ এ লজিস্টিক তো কাল ও লজিস্টিকের সাথে কথা বলি। সব কথা শেষ হবার পর বলে, “ভাই, আপনার উদ্যোগটা ভাল। কিন্তু আমাদের পক্ষে আপনাদের সার্ভিস দেওয়া সম্ভব না।“ কেউ কেউ তো সরাসরিই মুখের উপরেই না করে দেয়। কিন্তু কেন?
দেশে যত লজিস্টিক কোম্পানী আছে, সবাই সাধারণত একমুখী ডেলিভারী দেয়। অর্থাৎ, নির্দিষ্ট একটি হাব থেকে প্রতিদিন ১০০ বা ২০০ পার্সেল কালেক্ট করে, এরপর সারাদেশজুড়ে সেই পার্সেলগুলো ডেলিভারি করে। এভাবে কাজ করেই সবাই অভ্যস্ত।
কিন্তু আমাদের, অর্থাৎ বই বিনিময় ডট কম এর প্রয়োজন ছিল দ্বিমুখী লজিস্টিক সেবা। কেননা আমাদের এখানে একটি হাব থেকে ২০০ টি জায়গায় ডেলিভারী হলেও, পাঠকের বই পড়া শেষ হলে আবার ২০০ টি জায়গা থেকে পার্সেল কালেক্ট করতে হতো, যে চ্যালেঞ্জটি কোন লজিস্টিক পার্টনারই নিতে চায়নি। আমার এখনো মনে আছে, আমি এক মাস ধরে ১৪-১৫ টি লজিস্টিক পার্টনারের সাথে কথা বলেছিলাম আর সবাই রেসপন্স করেছিল নেগেটিভ। এর মাঝে ছিল রেডেক্স, পাঠাও কুরিয়ার, রকমারির লজিস্টিক পার্টনার, ডেলিভারি টাইগার, চালডালের লজিস্টিক পার্টনার গো গো বাংলাসহ আরো অনেক নামীদামী লজিস্টিক সার্ভিস প্রভাইডার। আমার এতদিনের স্বপ্নের প্রজেক্ট তখন হতাশার মুখে পড়ে গেলো। এটা জানা কথা লজিস্টিক সার্ভিস ছাড়া এই প্রজেক্ট বাস্তবায়ন অসম্ভব।
তখন আমরা একটা জিনিস বুঝতে পারলাম, দেশের প্রতিষ্ঠিত কোন লজিস্টিক কোম্পানীই আমাদের ডেলিভারী দেবে না, কেননা তারা একটি সিস্টেমে এতদিন চলে আসছে। আমাদের জন্য তারা সিস্টেম পাল্টাতে পারবে না। আমাদেরকে ধরতে হবে এমন কোন স্টার্টআপ লজিস্টিককে, তাদের মাঝে চ্যালেঞ্জ নেওয়ার একটা মানসিকতা থাকবে, সেই সাথে মার্চেন্ট কম হওয়ায় কিছু ডেলিভারীর আশায় আমাদের সাথে কাজ করলেও করতে পারে। আগের রাস্তা ছেড়ে তাই নতুন রাস্তা ধরলাম। বেশ কিছু স্টার্টআপ লজিস্টিকের সাথে কথা বললাম, কয়েকজন আগ্রহ প্রকাশ করলো। এর মাঝে একজনের সাথে ডিল করে আমরা চুক্তি ফাইনাল করলাম। এভাবেই সেই ট্রাজেডির হাত থেকে বই বিনিময় ডট কম রক্ষা পেল।
এভাবে লজিস্টিকসহ টুকটাক ঝামেলাগুলো মিটিয়ে এবার বইবিনিময়ের লউঞ্চিং এর পরিকল্পনা করলাম। অনেক হিসাব-নিকাশ করে টানা ৯ মাসের পরিশ্রমের পর লউঞ্চিং ডেট ডিসেম্বরের ১০ তারিখ থেকে যাত্রা শুরু করলো দেশের সর্বপ্রথম অনলাইন বুক শেয়ারিং সাইট বই বিনিময় ডট কম।
এটাই হচ্ছে যাত্রা শুরুর পূর্বের কাহিনী। সত্যি কথা বলতে লউঞ্চিং এর পূর্বের ৯ মাসের জার্নি আমাদের জন্য কিছুটা “তেতোই” ছিল বটে। তবে এই পুরোটা সময় জুড়ে আমার পাশে ছিল কলেজেরই বড় দুই ভাই সাফায়েত হোসাইন জীম ও শাহরিয়ার রহমান অনিক। পরবর্তীতে তারা দুইজনই অফিসিয়ালি বই বিনিময় ডট কম এ যুক্ত হন।
এলভিঃ যাত্রা শুরুর পরের অভিজ্ঞতার কথা বলুন
মোঃ সাজ্জাদুরঃ সাইট লউঞ্চিং এর আগের জার্নিটা কিছুটা তেতো হলেও পরের জার্নিটা ছিল আমাদের চাওয়ার চেয়েও বেশি কিছু। দেশের বইপ্রেমিরা আমাদের এতটা আপন করে নেবে, সত্যি তা আমাদের কল্পনাতেও ছিল না। যতজন বইপাঠকই আমাদের সম্পর্কে জেনেছে বা আমাদের সাথে কথা বলেছে, সকলেই আমাদের কাজকে সাপোর্ট করেছে। বইপাঠকদের থেকে এই সাড়াটা আমাদের খুব করে দরকার ছিল।
যদিও বইবিনিময় কাজ করে শুধুই পাঠকদের জন্য, শুধুই পাঠকদের উদ্দেশ্য করে, তারপরও মনের মাঝে ক্ষীণ সন্দেহ থেকেই যায় – যাদের জন্য এই অক্লান্ত পরিশ্রম, তারা ঠিকঠাক ভাবে বইবিনিময়কে নেবে তো? গ্রহণ করবে তো? নাকি ছুঁড়ে দেবে সমালোচনার তীর?
সব আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে সকল বই পাঠকই আপন করে নেয় বইবিনিময়কে। বইয়ের অর্ডার আসার পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গা থেকে বই ধার আসা শুরু হয়। যেহেতু আমরা শুধু বই ধারই দেই না বরং যাদের বাসায় গাদাখানিক বই বুকশেলফে শিকলবন্দি হয়ে থাকে, তাদেরও বই ধার দেওয়ার সুযোগ দেই আমাদের মাধ্যমে। আমরা সত্যিই সেইসব বইবন্ধুর প্রতি কৃতজ্ঞ, যারা আমাদের কেবল অনলাইনে দেখেই তাদের বাসার বইগুলো আমাদের হাতে তুলে দিয়েছেন আমানত হিসেবে। বইপাঠক-বইবন্ধুদের থেকে এতটাই সাড়া পাই যে, যাত্রা শুরুর প্রথম সপ্তাহেই এন্ড্রয়েড প্লে স্টোরে রিলিজ করা হয় বই বিনিময় ডট কম এর অ্যাপ।
পাঠকদের পাশাপাশি আরো অনেকেই বইবিনিময়ের কার্যক্রমকে স্বাগত জানায়। বই বিনিময় ডট কম যে দামে বই অর্ডার নেয় আর যে চার্জে ডেলিভারী দেয়, এই দামে আর যাই হোক লাভ করা যে সম্ভব নয়, এটা বুঝতে রকেট সায়েন্টিস্ট হতে হয় না। যতটুকুও বা মাস শেষে জমা হয়, সেটুকুও ওয়েবসাইট এর হোস্টিং এর পিছনে খরচ হয়। এই কথাটুকুই বুঝতে পেরেছিলেন ডায়ানাহোস্ট এর সিইও। যেহেতু আমাদের ওয়েবসাইট এর হোস্টিং প্রভাইডার ডায়ানাহোস্ট, তাই সিইও মোহাম্মাদ নাকিব ভাই আমাদের কার্যক্রমকে আরো এগিয়ে নিতে প্রতি মাস শেষে হোস্টিং চার্জ সম্পুর্ণ ফ্রি করে দেন। এটাও আমাদের একটা বড় পাওনা।
যাত্রা শুরুর পর থেকে এখনো পর্যন্ত আমাদের সবচেয়ে বেশিবার যে প্রশ্নটি শুনতে হয়েছে, তা হলো – কেন আমরা একটি লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা বাদ দিয়ে একটি “অনলাইন বুক শেয়ারিং সাইট” প্লাটফর্ম নিয়ে কাজ করছি?
এখানে মূলত দুইটি প্রশ্ন রয়েছে। কেন লাইব্রেরি বাদ দিয়ে বুক শেয়ারিং প্লাটফর্ম নিয়ে কাজ করছি আর কেনই বা সেটা অনলাইনে করছি। প্রশ্ন দুইটির উত্তর খুব সোজা।
১/ কেন আমরা লাইব্রেরি বাদ দিয়ে বুক শেয়ারিং অর্গানাইজেশন নিয়ে কাজ করছি?
কারণ, যেখানে লাইব্রেরি তে শুধু বই ধারই নেওয়া যায়, সেখানে একটি বুক শেয়ারিং অর্গানাইজেশন এ বই ধার নেওয়ার পাশাপাশি নিজের বাসায় হেলাফেলায় পড়ে থাকা বই অন্যদেরও পড়ার সুযোগ করে দেওয়া যায় ধার দিয়ে বা ডোনেট করার মাধ্যমে। অর্থাৎ, একটি বুক শেয়ারিং প্লাটফর্মে লাইব্রেরির চেয়ে পাঠক ও বই নিয়ে কাজ করার সুযোগ একটু হলেও বেশি।
২/ কিন্তু কেন আমরা সম্পূর্ণ ব্যাপারটি অনলাইনে দাড় করালাম?
কারণ, একটি অফলাইন লাইব্রেরির পরিসর হয় খুবই সীমিত। সর্বোচ্চ আপনার এলাকা, বা তার পাশের এলাকা। কিন্তু ১০ কি.মি দূর থেকে কিন্তু কেউ লাইব্রেরি থেকে বই নিতে আসবে না। অর্থাৎ, লাইব্রেরির সুফল ভোগ করতে পারে খুব অল্প সংখ্যক জনগোষ্ঠী।
আজ আমাদের প্লাটফর্মের কাজ আমরা অনলাইনে পরিচালনা করছি। তাই ঢাকার উত্তরা থেকে সম্পূর্ণ ঢাকার পাশাপাশি গাজীপুর, কেরানীগঞ্জ, সাভার, ডেমরা এমনকি ৪০ কি.মি দূরের নারায়ণগঞ্জেও আমরা পাঠকদের দোড়গোড়ায় বই নিয়ে হাজির হতে পারছি। কিন্তু একটি অফলাইন লাইব্রেরি বা বুক শেয়ারিং প্লাটফর্ম গড়লে সেটি সম্ভব ছিলো না।
অনলাইনের গুরুত্ব বোঝা যায় রকমারির দিকে তাকালে। বই কেনাবেচায় বড়সড় একটা বিপ্লব ঘটিয়ে ফেলেছে তারা। আজ রকমারি মতিঝিলের একটি অফিস নিয়ে সারাদেশ বইয়ে বইয়ে ছয়লাব করে ফেলেছে। কিন্তু ঠিক একই অফিস নিয়ে যদি কেউ একটি অফলাইন লাইব্রেরি দিতো, একটি বইয়ের দোকান দিতো তার পক্ষে কি সম্ভব ছিলো ৫৬ হাজার বর্গমাইল বইয়ে বইয়ে ছয়লাব করে দেওয়া? মনে হয় না।
এলভিঃ বই বিনিময়ের বর্তমান অবস্থা কি?
মোঃ সাজ্জাদুরঃ যেদিন মাথায় আইডিয়াটা এসেছিলো আর কাজে নেমেছিলাম, তখন হাতে ছিলো শুণ্য টাকা। তবে মাথা ভর্তি ছিলো কাজ করার অনুপ্রেরণা। সেদিন শুণ্য টাকা দিয়ে শুরু করলেও আজ এখনো পর্যন্ত কোম্পানীর পিছনে ইনভেস্ট লাখ টাকার উপরে। অর্থের ভয়ে দমে না গিয়ে কাজ করে যাওয়াটা ছিলো সেই মুহূর্তে আমাদের সবচেয়ে ভালো ডিসিশন। যার ফলে বইবিনিময় ডট কম আজ এইখানে।
বর্তমানে আমাদের রেজিস্টারেড পাঠকের সংখ্যা ১৮০০+ বেশি, যাদের কাছে আমরা প্রায় ২০০০ হাজার বই ডেলিভারী করেছি। প্লে স্টোরে আমাদের অ্যাপসির বর্তমান ডাউনলোড সংখ্যা ৩০০০+। প্রথমে শুধু ঢাকাতে কার্যক্রম শুরু করলেও বর্তমানে আমরা আমদের সার্ভিস চালু রেখেছি ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, কেরানীগঞ্জ, গাজীপুর, সাভার ও ডেমরাতে।
২০২১ এ আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন থেকে দেশসেরা উদ্যোগের সম্মাননা পায় বইবিনিময় ডট কম। এটা ছিলো আমাদের অনেক বড় একটি প্রাপ্তি। তবে দিনশেষে আমাদের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হলো পাঠকের থেকে পাওয়া ভালোবাসা।
এলভিঃ আপনাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?
মোঃ সাজ্জাদুরঃ বইবিনিময়ের যাত্রা সবে শুরু, যেতে হবে এখনো অনেক দূর। বইবিনিময় নিয়ে কাজ করার পাশাপাশি আমরা নতুন আরেকটি কনসেপ্ট নিয়ে কাজ শুরু করেছি, তা হলো “বইয়ের ভাগাড়”। এই উদ্যোগটি আরো অনেক চমকপ্রদ হবে ইনশাআল্লাহ এবং পাঠকেরা সরাসরি এখানে সংযুক্ত হয়ে বই নিয়ে কাজ করতে পারবে।
আপাতত বইবিনিময়েই মূল ফোকাস, ইচ্ছা আছে সারা দেশে কার্যক্রমকে ছড়িয়ে দেবার। একদম সেন্ট্রাল থেকে হয়তো সারাদেশে কার্যক্রম পরিচালনা করা আমাদের পক্ষে সম্ভব না, যেহেতু বই লেনদেনের ব্যাপার এটা। কেনাবেচার না। তাই ইচ্ছা আছে এলাকা ভিত্তিক হাব গঠন করার। আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি যত দ্রুত সম্ভব সিলেট ও চট্টগ্রাম এ কোন হাব গঠন করা যায় কিনা। এসব জায়গার পাঠক প্রায়ই আমাদের নক দিয়ে জিজ্ঞেস করে, “ভাইয়া কবে নাগাদ কার্যক্রম শুরু করবেন?”
করবো ভাইয়া, ইনশাআল্লাহ শীঘ্রই করবো। শুধু সিলেট বা চট্টগ্রাম না। সারাদেশেই করবো ইনশাআল্লাহ। সবই সম্ভব যদি শুধু সবসময় পাশে পাই পাঠকদের, বাকিটা কেবল সময়ের অপেক্ষা…
এলভিঃ আপনাকে ধন্যবাদ
মোঃ সাজ্জাদুরঃ লাইব্রেরিয়ান ভয়েসকেও ধন্যবাদ।